তলোয়ার- রাইফেল নিয়ে করা বক্তব্যের জন্য ক্ষমা চাইলেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী হাবিবুল আউয়াল। তিনি বলেছেন, অস্ত্র নিয়ে করা সেই বক্তব্য গণমাধ্যম ভুলভাবে উপস্থাপন করায় সিইসির মর্যাদা ক্ষুন্ন হয়েছে। মঙ্গলবার (১৯ জুলাই) নির্বাচন ভবনে ইসলামী ঐক্যজোটের সঙ্গে সংলাপের সূচনা বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।
প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী হাবিবুল আউয়াল বলেন, অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন প্রয়োজন; যেখানে ভোটাররা নির্বিঘ্নে ভোট দিতে পারবে।
সিইসি বলেন, সেই লক্ষ্যে যেটা প্রাসঙ্গিক, একটা সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ, অবাধ, অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন, যেখানে ভোটাররা নির্বিঘ্নে তাদের ভোট দিতে পারবেন। অনেক সময় তর্ক-বিতর্ক হয় যে নির্বিঘ্নে ভোট দিতে পারে না।
মঙ্গলবার তৃতীয় দিনের সংলাপ শুরু হয় ইসলামী ঐক্যজোটকে দিয়ে। যদিও সংলাপের আমন্ত্রণ পেয়ে যোগ দেয়নি বিএনপি জোটের শরিক দল কল্যাণ পার্টি। সংলাপে ইসলামী ঐক্যজোটের চেয়ারম্যান মাওলানা আবুল হাসানাত আমিনীর নেতৃত্বে ১১ সদস্যের প্রতিনিধি দল অংশ নেয়। এতে সিইসির সঙ্গে চার নির্বাচন কমিশনারসহ ইসির ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা অংশ নিয়েছেন।
সংলাপে ইসলামি ঐক্যজোটের পক্ষ থেকে রাজনৈতিক পরিচয়ে নিয়োগকৃত কর্মকর্তাদের ভোটের সময় দায়িত্ব না দেয়া, নির্বাচনে ইভিএম ব্যবহার না করাসহ ১১ দফা দাবি উত্থাপন করেন। দলটির পক্ষ থেকে অস্ত্র নিয়ে করা সিইসির বক্তব্যের সমালোচনা করা হয়। পরে সিইসি বলেন, অস্ত্র নিয়ে করা মন্তব্য ছিলো রসাত্মক, কথার পিঠের কথা।
কাজী হাবিবুল আউয়াল বলেন, জাতীয় সাধারণ নির্বাচন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। কারণ এটা দিয়েই কিন্তু সংসদ সদস্যরা নির্বাচিত হবেন। সংসদ গঠন করবেন। আর সেই সংসদ উঠে আসবে কেবিনেট বা সরকার উঠে আসবে। সেদিক থেকে গুরুত্ব অপরিসীম।
তিনি বলেন, নির্বাচনকালীন সরকার নিয়ে কোন দাবি থাকলে তা সরকারের কাছে তুলে ধরুন। বর্তমান কমিশন চায় সব দলের অংশগ্রহণে একটি গ্রহণযোগ্য নির্বাচন।
সকালে বাংলাদেশ কল্যাণ পার্টির সঙ্গে বৈঠকের সময় নির্ধারণ করা ছিল। কিন্তু দলটি আসবে না বলে জানিয়েছে। এর আগে বাংলাদেশ মুসলিম লীগও সংলাপে অংশ নেয়নি। এ পর্যন্ত আটটি দলের সঙ্গে সংলাপ সম্পন্ন করেছে ইসি। আগামী ৩১ জুলাই পর্যন্ত অন্য ২৯টি দলের সঙ্গেও বসার কথা রয়েছে ইসির।
প্রসঙ্গত, সোমবার রাজধানীর আগারগাঁওয়ে নির্বাচন ভবনে ইসির সঙ্গে সংলাপে সিইসির তলোয়ার–বন্দুক নিয়ে বক্তব্যের বিষয়টি তোলেন বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক।
কেউ তলোয়াড় নিয়ে দাড়াঁলে প্রতিপক্ষকে রাইফেল নিয়ে দাঁড়াতে সিইসির আগের দিনের পরামর্শের সমালোচনা করে তিনি বলেন, এটা কী অস্ত্রবাজি বা মল্লযুদ্ধের জায়গা? নিশ্চয়ই সেই জায়গা নয়। জবাবে সিইসি জানান, তিনি মন থেকে ওই বক্তব্য দেননি। আলোচনার প্রসঙ্গক্রমে তিনি কৌতুক করে এনডিএম চেয়ারম্যান ববি হাজ্জাজকে কথাটি বলেছেন।